একান্ত আপন

 একান্ত আপন

একজন ব্লগার হয়ে ওঠার গল্প

আমি আগে ব্লগ যে কি জিনিস হয় তা জানতাম ই না! এই ব্যাপারে আমার গুরু হল আমার হাজব্যান্ড তাই আজ সবার আগে আমি ওকে thanks জানাতে চাই আমাকে এত সুন্দর একটা সময় কাটানোর উপযোগী কাজ খুঁজে দেবার জন্য।আর আমার ছেলে মেয়ে কেও বাদ রাখি কি করে! আমার পেজ সেট আপ করে দেওয়া থেকে কম্পিউটার এ টাইপ করে দেওয়া,ফটো অ্যাড করে দেওয়া সব তো ওরাই আমায় শিখিয়েছে! কারণ আমরা সেই যুগ থেকে এসেছি যখন রেডিও,ব্ল্যাক  অ্যান্ড white টিভি ছাড়া কিছুই ছিল না! তাও আবার sunday সকালে শুধু বাচ্ছাদের দেখার মত ১০-১২ অবধি কিছু প্রোগ্রাম হত,অন্যদিন হরে কর কম্বা,তরুণদের জন্য এই সব হত মনে আছে।তাই আজকের যুগে বসে কম্পিউটার এ কোন কাজ করতে আমি বাচ্ছাদের হেল্প নি,আর ওরা খুব ই দয়ালু, দেখিয়েও দেয়।

আজ আমার একজন ব্লগার হয়ে ওঠার পিছনে ওদের সবার অবদান আমার কাছে অনস্বীকার্য!

আমার এই লেখাটা পরের সপ্তাহে যেদিন বেরোবে সেদিন টা আমি আমার জীবনের একটা বিশেষ দিন হিসাবে মনে রাখব ঠিক করেছি।ওই দিন টা হবে আমার thanks গিভিং ডে,প্রকৃত অর্থেই বড় দিন!!

***********************************************************************************

একান্ত আপন

মাস্কাট ডায়েরি

অন্তিম পর্ব

আমাদের যখন গাড়ি ছিল না তখন আমার হাজব্যান্ড কে কিছু লোকের থেকে এত অমানবিক ব্যাবহার পেতে হয়েছিল যে কি বলব! যে দেশে তেল এত্ত সস্তা সেখানে কেও কারোর সঙ্গে যে এরকম ব্যাবহার করতে পারে ,জাস্ট বিশ্বাস হয় না!

আমার হাজব্যান্ড কে কাজের জন্য প্রায় ই ব্যাংক এ আসতে হয়,তো এরকম ই অনেকদিন একজনের সঙ্গে ব্যাংক এ আসত,আর সে করত কি ব্যাংকের কাজ হয়ে গেলে প্রায় ২ কি .মি দূর থেকে মুমতাজ arear জলের বড় ট্যাংক টা দেখিয়ে বলে দিত, ওই তো তোমার বাড়ি দেখা যাচ্ছে তুমি হেঁটে চলে যাও।এই বলে ৫০ ডিগ্রী টেম্পারেচার এ ওকে হাঁটতে বলে নিজে গাড়ি নিয়ে ভোঁ করে চলে যেত! ভাবুন কতটা অমানবিক হলে মানুষ এরকম করতে পারে! অবশ্য এদের আদৌ মানুষ বলা যায় কি?? ওর যে সেই সময় গুলো কি গেছে,গরম এ যে সান স্ট্রোক হয়ে যায়নি এটা ভগবানের অপার কৃপা!

আবার কিছু ভালো মানুষ ও এই দুনিয়ায় আছে যাদের জন্য আজ ও পৃথিবী টা চলছে।এরকম ই একটা পরিবারের সঙ্গে আমাদের পরে আলাপ হয়েছে যাদের উপকারের কথা না বললে এই লেখা সম্পূর্ন হবে না।আমাদের ওই বন্ধু পরিবার তখন মানে ওই সময় তে যেখানে নিজেরা বেড়াতে যেত আমাদের নিয়ে যেত,সে বীচ হোক বা কোন মল্।ওর বাচ্ছাদের সঙ্গে আমার ছেলে মেয়ে প্রচন্ড এনজয় করত।আর আমি তো আমার বন্ধুর সঙ্গে এমন গল্পে মেতে থাকতাম যে বাড়ি পৌঁছেও সে গল্প শেষ হত না!

আজ ও ওদের সঙ্গে আমাদের সেই একই রকম সম্পর্ক রয়ে গেছে।ওদের কাছে আমরা সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব,ওদের উপকার যে ভোলার নয়।তাই একদিন যখন ও বলল যে ওরা এবার হয়ত ইন্ডিয়া চলে যাবে মনটা যেন কেমন হু হু করে উঠল।

ভালোয় মন্দয় দুটো বছর কাটিয়ে ২০১০ এ আমার হাজব্যান্ড লাইসেন্স পেল আর একটা প্রমোশন পাবার পর আমাদের বাচ্ছাদের স্কুলের ফিজ ও sanction হয়ে গেল।ব্যাস তারপর থেকে আজ অবধি মাস্কাট এ আর খুব একটা অসুবিধে হয়নি।

এই ছিল প্রথম দুটো বছরের জীবন। তাও মাঝে মাঝেই বলেছি ধূর চলে যাব,কিন্ত পারিনি।দেখতে দেখতে আমার ছেলের স্কুল লাইফ শেষ হয়ে গেল, মেয়ে এবার সিনিয়র এ চলে যাবে,দিনগুলো যে কি ভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না!

অবশ্যই ভগবানকে ও ধন্যবাদ উনি আমাদের শক্তি দিয়েছেন এমন কঠিন একটা সময় পেরিয়ে আসতে।আসা করি এখন সারা পৃথিবী যে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেটাকেও আমরা খুব শীঘ্রই পিছনে ফেলে আবার সামনে এগিয়ে যাব।

সমাপ্ত

মন্তব্যসমূহ

  1. এত সুন্দর করে সহজ সরল ভাষায় তোর মনের কথা প্রকাশ করছিস খুব ভালো লাগছে। একই সাথে তোর মানুষ চেনার অভিজ্ঞতা আর তোর সরল-সহজ মনের প্রকাশ তোর লেখাতে পেলাম। খুব ভালো লাগলো, আরো লেখ। আরো পড়তে পারব তাহলে।

    উত্তরমুছুন
  2. তুই লেখ,তবেই তো আমরা পড়তে পারবো

    উত্তরমুছুন
  3. সুন্দর সুন্দর লেখার মধ্যে দিয়ে নিজের মনের আনন্দ টা মেটানো যায় ।আর আমরাও পড়ে আনন্দ পাই।

    উত্তরমুছুন
  4. Hmm muscat diary r modhye diye onek jomano byatha bedona sare korte pere amar khub bhalo laglo.

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ