একান্ত আপন
ব্যাংকক এ আসার পর এটা আমাদের দ্বিতীয় দিন।আজ আমাদের প্ল্যান হলো দুটো টেম্পল দেখার,traimit Buddha আর মার্বেল টেম্পল বা ওয়াট বেঞ্চামাবোফিত।দুটোই এখানকার অন্যতম বিখ্যাত টেম্পল গুলোর মধ্যে পড়ে।
যথারীতি ঠিক সময় এ আমাদের পিক আপ ড্রপ এর গাড়ি এসে হাজির।কিন্ত ওইদিন আমার হাজব্যান্ড এর ব্রেক ফাস্ট সারতে একটু দেরি হয়ে গেছিল,কিন্ত ওরা আমাদের জন্য একটু অপেক্ষা করে ছিল আমার মনে আছে! সে যাই হোক আমরা চল লাম প্রথম এ ওয়াট traimit দেখতে।অনেক সিড়ি ভেঙ্গে ওপরে উঠতে হয়, তবেই দর্শন হবে ৫৫০০ কেজি ওজনের সলিড সোনার Buddha দেবের।
Buddha দেব এখানে বসে আছেন( মারাভিজায়া অ্যাটিটিউড)।প্রায় ২০০ বছর এই মূর্তি stucco আর coloured গ্লাস দিয়ে ঢাকা ছিল এর আসল value লুকিয়ে রাখতে,কিন্ত তারপর রিলোকেশন এর সময় মূর্তির গা থেকে প্লাস্টার খসে পড়তেই বেরিয়ে পড়লো আসল রহস্য! সেটা হচ্ছে এই যে এটা আসলে সলিড গোল্ড দিয়ে তৈরী।অসাধারণ এর রূপ। বুদ্ধ দেবের মধ্যে কি আছে জানি না তবে ওনার দিকে তাকালেই মন টা যেন কি রকম শান্ত হয়ে যায়,আমার তো হয়েছে,যখন ই দেখেছি ,যে রূপে দেখেছি!
তবে একটা জিনিষ আমায় খুব অবাক করেছে সেটা হল,যখন মন্দিরের ওপরে উঠছি তখন দেখলাম ওদের রাজা আর নতুন রাণী মার বড় একটা ছবি যা ওই খানে খুব ই বেমানান।
মন্দিরের বাইরের গঠন শৈলী ও দেখবার মত।মন্দিরের সোনালি চূড়ো যেন আকাশে মিশেছে।সব মিলিয়ে আমাদের দেখা মন্দির গুলোর থেকে একেবারেই আলাদা।কোথাও কোনো প্রণামি বক্স ও চোখে পড়েনি।আমার ছেলে মেয়ে ও কিন্ত এই দিনের প্রোগ্রাম এ একটু ও বোর হয়নি,এত সুন্দর জায়গা গুলো।
প্রতিটা টেম্পল এর আরাধ্য দেবতা একজন ই ভগবান বুদ্ধ কিন্তু প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন গঠন শৈলী সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে!
এখানে প্রচুর ফটো তুলে আমরা রওনা দিলাম মার্বেল টেম্পল এর উদ্দ্যেশ্যে।এই টেম্পলের বাইরের গঠন দেখে আমরা আপ্লুত।কারণ এটাই তো আমরা নেট এ অনেক বার দেখেছি,ভাবতেই পারছিলাম না যে আজ আমরা সামনাসামনি দাঁড়িয়ে।আমাদের গাইড প্রথম এ এটাকে মার্বেল Buddha বলছিল তাই একটু কনফিউজ লাগছিল কারণ বুদ্ধের মূর্তি তো মার্বেল এর নয়,গোল্ডেন colour এর তাহলে! পরে গল্প শুনে বুঝলাম যে আসলে এই মন্দিরের বাইরের সব দেওয়াল গুলো ইটালিয়ান মার্বেল এর তৈরী তাই এটাকে মার্বেল Buddha বলছে।এখানেই প্রথম monk দেখলাম কিন্ত ছবি তোলার সাহস হয়নি। মন্দিরের পুরো চত্বরেই ছিল অপার শান্তি যা আমাদের দেশে খুব ই বিরল! কোথাও ই ফটো তোলার কোনো বিধি নিষেধ নেই! তাই সব মন্দিরের ভেতরে আমরা ছবি তুলেছি।
এগুলো সব ই হাফ ডে tour।তাই দুটো টেম্পল দেখানোর পর ওরা আমাদের নিয়ে গেল একটা গভমেন্ট এম্পোরিয়াম এ কেনা কাটা করতে( জেমস আর জুয়েলারি ) ।এই জায়গায় ঢুকে মনে হল যে আমরা যেন কোন আরব্য রজনীর কোন এক রাজার কোষাগার এ ঢুকে পড়েছি! চারদিকে মনি মানিক্য ছড়িয়ে রয়েছে! আজ ও লিখতে গিয়ে গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।আমরা তো প্রথম এ যেতে চাইনি কারণ ওসব দেখে লোভ সামলাতে পারবো না তারপর ফালতু পয়সা খরচ হবে তাই।কিন্ত গাইড বললো না গেলে হবে না কারণ গাড়িতে আমাদের wait করতে দেবে না এসি বন্ধ করে দেবে তখন আমরা ওই ভ্যাপসা গরম এ কোথায় দাঁড়াব, অগত্যা আর কি করা,গেলাম ভেতরে।
আগেই শুনেছিলাম যে ব্যাংকক এ পাথর খুব ভাল পাওয়া যায়।কিন্ত কোন বড় দোকান থেকে কিনতে হবে কারণ ওখানে ভীষন দু নম্বরী হয়।এটা যেহেতু গভর্মেন্ট এম্পোরিয়াম তাই এখানে ডুপ্লিকেট জিনিস গচাবার চান্স কম জেনে আমরা একটা topaz এর সেট কিনেছিলাম।জিনিস টা আসল ই ছিল পরে কলকাতায় আমাদের চেনা সোনার দোকানে দেখিয়ে ছিলাম,যদিও তখন নকল বেরোলেও কিছু করার নেই।
হাজব্যান্ড বেড়াতে এসে যদি জুয়েলারি কিনে দেয় তাহলে কোন্ গিন্নির ভালো না লাগে! আমিও তার উর্ধ্বে নই,আমি তো একেবারে গদগদ যাকে বলে! গরম এ ঘুরে বেড়ানোর সব কষ্ট যেন এক লহমায় কেও মুছিয়ে দিল!
বিকেলের মধ্যেই হোটেলে ফিরে বিশ্রাম নিয়ে আবার এনার্জি জমিয়ে নিলাম পরের দিনের হেক্টিক সিডিউল এর জন্য।
ক্রমশঃ
* Traimit Buddha র সম্বন্ধে আমি যা লিখেছি সেগুলো আমি গুগল থেকে পেয়েছি।আমাদের গাইড ও বলেছিল কিন্ত এতদিন বাদে কিছু মনে পড়ছে না তাই গুগল এর দ্বারস্থ হয়েছি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন