একান্ত আপন
২ য় পর্ব
"সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়" সত্যি সময়টা যেন বড্ড তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছে।তবে আমরা সবাই হয়ত এটাই চাইছি যে এই বিচ্ছিরি সময় টার থেকে যতটা তাড়াতাড়ি নিষ্কৃতি পাওয়া যায়! আমি ভাবছি আবার একটা বৃহস্পতি বার এসে যাচ্ছে কিন্তু আমার লেখা এখন ও রেডি হয়নি।তাই আর দেরি না করে লেখাতেই মন দিলাম।প্রতি সপ্তাহে একটা করে আশার আলো দেখি যখন খবর এ আসে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত কোনো নতুন ইনফরমেশন।কিন্তু না! তার পরেই আবার সেই নিরাশার গল্প।আর ভালো লাগে না!
অতএব মন ভালো করতে চলুন একটু আবার পিছন ফিরে তাকাই,যেখানে আছে শুধুই মজা আর হইহই।আমরা আবার যাবো pattya,দেখি সেখানে তারপর কি কি হলো -
৩য় দিন - আমাদের প্ল্যান ছিল আমরা এই দিন হাফ ডে সাইট সীন নেব নং নুচ ভিলেজের,কিন্তু আগের দিন হঠাৎ ই গাইড আমাদের বললো যে আমরা যদি ওই দিন সকাল এ আগে সির রচা টাইগার জু দেখে তারপর নং নুচ্ যাই তাহলে আরো ভাল হবে। কিন্ত ওদের এই প্ল্যান এ রাজি হয়ে আমরা যে কি ভুল করেছিলাম কি বলব! টাইগার জু খুব ই ভাল লেগেছিল বটে কারণ ওখানে আমরা শুধু বাঘ ই নয়; হাতি, কুমির সবার খেলাই দেখেছিলাম।ভয় পেয়েছিলাম কুমির এর খেলা দেখার সময় কারণ যারা খেলা দেখাচ্ছে তাদের অসীম সাহস থাকলেও আমাদের সবসময় মনে হচ্ছিল যে ওরা তো জানোয়ার,কখন ও যদি ট্রেনিং এর বাইরে গিয়ে কিছু করে( বিরক্ত হয়ে) তাহলে ওদের প্রাণ টাই চলে যাবে।কিন্ত ওটাই তো ওদের কাজ,হয়ত এই করেই ওরা ওদের পরিবারের মুখে অন্ন জোগায়,তাই লজ্জা ঘেন্না ভয় ওদের স্পর্শ করে না! সকাল থেকে দুপুর অবধি ওখানে কাটিয়ে আমাদের পেট যখন খিদেয় চুইচুই তখন ওরা আমাদের একটা জঘন্য রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে গেল লাঞ্চ করতে।তখন অবশ্য আমরা আর অত কিছু না দেখে যা পেয়েছি খেয়ে নিয়েছিলাম।
বিকেল ৫ টা নাগাদ আমরা পৌঁছলাম নং নুছ ভিলেজে।সে তখন আমাদের গাইড টা প্রায় দৌড়তে দৌড়তে আমাদের একটা হল এর মধ্যে বসিয়ে দিয়ে গেল যেখানে থাই folk প্রোগ্রাম চলছে।আসলে এই দুটো জায়গা ছিলো দুই প্রান্তে,তাই আমরা বিকেল এ যখন ভিলেজে পৌঁছলাম তখন ওটা প্রায় বন্ধের সময় হয়ে আসছিল।তাই অত তাড়া।ওখান থেকে বেরিয়ে আমি আর আমার মেয়ে গেলাম অর্কিড গার্ডেন এ,আর আমার ছেলে, হাবি গেলো একটা গাড়ির ছোটো কি কালেকশন ছিল সেটা দেখতে।অর্কিড গার্ডেন টা তো বেশ কয়েক মাইল জায়গা নিয়ে করা, পুরোটাই বাস এ ঘুরিয়ে দেখায়।কেও কেও হাতির পিঠে চেপেও ঘোরে।হাতির পিঠে চেপে ঘুরতে গেলে অনেক টা বেশী চার্জ। বাচ্চারা সঙ্গে থাকলে এইসব জায়গা ওরা একদম ই এনজয় করে না, বোর হয়। আমারও মনে হয়ে ছিল এখানে না এসে বাঘ কে দুধ খাওয়ালেই ভাল হতো।২০০ টাকা নেয় ছোট্ট বাঘের ছানা কে খাওয়া তে।তবে ওরা তো মাংসাশী প্রাণী কিন্ত লোকের আবদার মেটাতে ওই অত দুধ যে কি করে হজম করে কে জানে বাবা!! হয়ত রোজ ই রাতে পেট ব্যাথায় কান্নাকাটি করে। আহা গো!
এই নং নুচেই আমরা দেখলাম হাতি কি সুন্দর ড্রয়িং করলো! ওই ড্রয়িং টা আবার ৫০০ টাকা দিলে কেনাও যাবে।আমরা কিনিনি কারণ কাগজ টা ভিজে ( ওয়াটার কালার বলে) ,নিয়ে যেতে গিয়েই ছিঁড়ে যাবে তাই।ওখানে একটা বাচ্ছা ( মেম) তো হাতিকে খাওয়াবে বলে কলা কিনে কিনে মাকে ফতুর করে দিল।তবে মেমেন্টো হিসেবে এখান থেকে হাতির ড্রয়িং টাই টি শার্ট এ প্রিন্ট করা পাওয়া যায়,সেটা কেনা যেতে পারে।
জায়গাটা খুব ই ভাল ছিল কিন্ত এক ই দিন এ দুটো ঘুরে আমরা এত ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম যে পরের দিকে আর ভালো লাগছিল না ঘুরতে।আর আমাদের ক্লান্তির মাশুল দিল আমাদের ছাতা ভর্তি একটা শপিং ব্যাগ! মানে টা নিশ্চই জলের মত পরিস্কার; আমার ছেলে বা আমার হাজব্যান্ড( সেটা আজ ও পরিষ্কার নয়) কেও একজন কফি শপ এ ব্যাগ টা রেখে দিয়ে ভুলেই গিয়েছিল আর ওই বৃষ্টির মধ্যে আমাদের পরম বন্ধু হারিয়ে গিয়েছিল।আমাদের সব থেকে দুর্ভাগ্য যে সেটা আমরা টের পেয়ে ছিলাম ওখান থেকে অনেক টা চলে আসার পর।তখন আর কিছু করার ও ছিল না, village বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। চারটে ছাতার মধ্যে দুটো তো যাবার আগেই কিনেছিলাম,বুকটা ফেটে যাচ্ছিল ।বুকে ওই যন্ত্রণা চেপেই পরের দিন আমরা dusit thani থেকে রওনা দিলাম ব্যাঙ্কক এর পথে।
*** দুটো ট্রিপ আলাদা দিনে করাই ভালো কারণ প্রতিটা ট্রিপ হাফ ডে লাগে ঘুরতে।আর যেহেতু সব জায়গা গুলো প্রকৃতির মধ্যে এমন ভাবে বানানো যে ম্যাপ ফলো করে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্তি আসবেই।
ক্রমশঃ
Gallery
Pattaya beach is very famous. You could have gone to the beach.
উত্তরমুছুনআমরা সবাই জল কে ভীষন ভয় পাই তাই কোনো ওয়াটার স্পোর্টস আমাদের প্যাকেজ এ রাখিনি।
উত্তরমুছুন