একান্ত আপন

একান্ত আপন
 যতদিন যাচ্ছে আরো যেন  নস্টালজিক হয়ে পড়ছি।মাস্কাট এ জানি না কোথা থেকে রাতের বেলায় এই ন টা র আশপাশে একটা ভোঁ এর শব্দ শুনতে পেয়েছি বেশ কয়েক বার। যখনি শব্দ টা কানে এসেছে ততবার ই ভীষন ভাবে ছোটো বেলার একটা অভ্যেস এর কথা মনে পড়ে গেছে।যে স্মৃতি টা আমায় ভালোলাগা আর মনখারাপ দুটোই দিয়েছে। আমাদের বাড়ি আর আমার মামারবাড়ী খুব কাছাকাছি হওয়ায় আমি রোজ ই সন্ধ্যে বেলায় পড়া হলে চলে যেতাম আমার জীবনের সবথেকে ভালো লাগার জায়গা য় ,যেটা আর কোথাও নয়,ছিল আমার দিদার বাড়ি।আর আমার মামার ডিউটি ছিল আমায় ওই ৯ টা র সময় বাড়ি পৌঁছে দেবার,ঠিক সেই সময় তেই দূরের কোনো জুট মিল থেকে একটা ভোঁ এর আওয়াজ ভেসে আসতো ,এখন যেমন মাস্কাট এ শুনতে পাই ঠিক সেই রকম।ওই আওয়াজ টা তাই যখন ই শুনতে পেয়েছি,দিদা,দাদু সবার কথা,আমার ছোটবেলার ওই সুন্দর দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেছে; যা আমায় একটা ভীষন ভালো লাগা আর মনখারাপ( কারণ দিদা দাদু আজ আর নেই) দুটোই দিয়েছে। স্মৃতি চারণ যখন করছি ই তখন আমার মেয়ে এর request এ আরো একটা আমার ছোটো বেলার ঘটনা ও লিপিবদ্ধ করলাম। 
 একবার হয়েছিল কি আমি আমার স্কুলের স্পোর্টস এ নাম দিয়েছিলাম,ইভেন্ট টা ছিল মোজা রেস।আমার স্কুল যেহেতু গার্লস স্কুল ছিল তাই শুধু ওইদিনই বাইরের সবাইকে স্কুল এ ঢুকে স্পোর্টস দেখার অনুমতি দেওয়া হতো। আমি চিরকাল ই একটু মোটাসোটা গোলগাল চেহারা র,তাই স্পোর্টস এর দিন একটু হলেও লজ্জা করছিল আর ভাবছিলাম যে নাম ন দিলেই বোধ হয় ভালো হতো।কিন্তু তখন আর কিছু করার নেই।আমি তো এই ভেবে মোজা রেস এ নাম দিয়েছিলাম যে এটা সব থেকে ইজি ইভেন্ট কিন্তু যখন আমার টার্ন এলো,তখন তো আমি ভয় এ কাঠ , মোজা পরতেও যে ট্রিক জানতে হয় সেটা তো জানতাম না।সেটা ঠিক আমার ও দোষ ছিল না কারণ দেবিশ্বরী তে কোনোদিন আমাদের জুতো মোজা পড়তেই হয় নি,আমরা রোজ চটি পড়ে স্কুল যেতাম।অনেক নিয়ম এর মধ্যে এটাও একটা নিয়ম ছিল যে ক্লাস এর মধ্যে ঠাকুর আছেন বলে আমাদের রোজ ক্লাস রুম এর বাইরে চটি খুলে ক্লাস এ ঢুকতে হবে।এই অভ্যেস যে একদিন এমন সর্বনাশ ঘটাবে সেটা কে জানত! আর কি হবার ছিল,যে ভয় টা পেয়ে ছিলাম যে আমি লাস্ট পৌঁছলে সারা মাঠ হাসবে ,তাই ঘটেছিল। নাকানি চোবানি খেয়ে সবার শেষে পৌঁছে আর পিছন ফিরে দেখার সাহস হয়নি যে কে ফার্স্ট বা সেকেন্ড হয়েছিল। । মোটা ছিলাম বলেই হয়তো খারাপ লেগেছিল বহুগুণ বেশী।তবে হ্যাঁ ,এখন ঘটনাটা মনে পড়লে আমি নিজেও হাসিতে ফেটে পড়ি,মন খারাপ করি না।

***********************************************************************************
কিমা ঘুগনি

picture source:akanto apon

দুর্গা পুজো এসে গেলো।বিজয়ার দিন মিষ্টির সঙ্গে একটু ঘুগনি হবে না, তাই কি হয়! আমি বাংলা থেকে দূরে থাকি বলে সব সময় ই এই ধরনের বাঙালি খাবার বাড়িতেই করে নিতে অভ্যস্থ।এটা আমার হাজব্যান্ড ই ভীষন ভালো করে তাই এই রান্না যখন ই হয় ওর টার্ন থাকে রান্না করার জন্য,আমরা শুধুই বসে বসে খাই।
উপকরণ
মটর ২০০
কিমা ২৫০ 
রসুন ৪/৫ কোয়া( বাটা)
আদা ১ ইঞ্চি (বাটা) 
পিঁয়াজ ২( chopped)
টমেটো ১ (chopped)
নুন ,মিষ্টি( পরিমাণ মতো)
আলু ১ ( ছোট করে কেটে নেওয়া)
সরষে তেল( পরিমাণ মতো)
ধনে , জিরে,হলুদ আর লঙ্কা গুঁড়ো ( পরিমাণ মতো)
প্রণালী
মটর সারা রাত বেকিং সোডা ( অল্প) দিয়ে জল এ ভিজিয়ে রাখতে হবে।
মটর, আলু সেদ্ধ করে নিতে হবে।এবার কড়াইতে তেল দিয়ে তাতে জিরে শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে নাড়াচাড়া করে পিঁয়াজ রসুন আদা টমেটো দিয়ে একটু ভাজাভাজা হলে কিমা টা দিতে হবে।এবার একে একে নুন ,মিষ্টি, হলুদ, লঙ্কা ,ধনে ও জিরে গুঁড়ো দিয়ে খুব ভালো করে কষতে হবে।তেল বেরোলে মটর আর আলু টা দিয়ে দিতে হবে। এবার মটর সেদ্ধর জল টা দিয়ে ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করতে হবে ।সবশেষে ভাজা মশলা দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।পিঁয়াজ, লংকা কুচি আর লেবুর রস দিয়ে পরিবেশন করতে হবে কিমা ঘুগনি।
* মৌরি জিরে শুকনো লঙ্কা আর আস্ত ধনে সমান পরিমাণ নিয়ে শুকনো খোলায় একটু ভেজে গুঁড়ো করে ভাজা মশলা তৈরী করতে হবে।





মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ