একান্ত আপন

একান্ত আপন

আমাদের ছোটো বেলা থেকে অনেক কথার মধ্যে একটা কথা প্রায় ই শুনে বড়ো হই যে না বলে কারো জিনিস এ হাত দিতে নেই।কিন্তু আমার একটা অভিজ্ঞতা বলছে আমাদের দেশের লোকেদের অনেকের ই এই বোধ টা একবারেই নেই।আমি যখন গরম কালে কলকাতা যাই ছুটি তে তখন সিটি সেন্টার ২ যাই কারণ ওই জায়গা টা আমার খুব ভালো লাগে। তো এরকম ই দু বছর আগে ওখানকার একটা খুব নাম করা দোকানএ গেছিলাম আমার মেয়ের জামা কিনতে,তখন আমার সাথে যে শপিং ব্যাগ টা ছিল সেটা যথারীতি জমা দিয়েছি।ব্যাগ এর মধ্যে মহা মূল্যবান বলতে ছিল একটা chinese ছাতা। বর্ষাকালে ছাতা র থেকে বেশী মূল্যবান আর কিছুই হতে পারে না।ওই ছাতা টার স্পেশালিটি ছিল এই যে ওটার হ্যান্ডেল এ একটা লাইট লাগানো ছিল আর আমার বর ভীষন সখ করে যাবার আগে লুলু থেকে ওটা কিনেছিলো। সে যাই হোক ছাতা র বায়ো ডাটা ছেড়ে এবার আসল কথায় আসি।আমরা তো মনের আনন্দে শপিং করে দোকান থেকে বেরিয়ে গেছি,জমা দেওয়া ব্যাগ টা না নিয়েই।কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করে মনে পড়তেই ছুটেছি ব্যাগ টা নিতে।যেতেই সিকিউরিটি ভদ্রলোক হেসে ব্যাগ টা আমাদের দিল কিন্তু তখন ওর হাসির রহস্য টা তো আর আমরা টের পাইনি! যখন টের পেলাম তখন আমরা আমাদের পরের গন্তব্য কলেজ স্ট্রিট এর পথে এবং যথারীতি ভীষন বৃষ্টি পড়ছে।আমরা যখন গাড়ি থেকে বই কিনতে নামবো বলে ছাতা খুঁজছি তখন বোঝা গেলো যে ওই মহান সিকিউরিটি ব্যাক্তি টি ব্যাগ থেকে আমাদের ওই স্পেশাল ছাতা গায়েব করে দিয়েছে।আহা! কি সুন্দর রক্ষক হয়ে ভক্ষক এর কাজ করে দিল।এই হচ্ছে আমার দেশ,বছরে একবার গিয়ে কি রিটার্ন ই পেলাম! সারাদিনের সব আনন্দ মাটি করে দিয়েছিল ওই একটা ঘটনা। এরকম ধাক্কা আমরা প্রতি বছর ই পাই এটা তার মধ্যে একটা।আসলে মাস্কাট এ থেকে নিজের জিনিস পত্র সামলে রাখার অভ্যেস টাই একদম চলে গেছে।

এবার মাস্কাট এর একটা ঘটনা বলবো যেটা দেখার পর আমাদের এই দেশটার প্রতি শ্রদ্ধা  আরো বহুগুণ  বেড়ে গিয়েছিল।

এটাও এখান কার সিটি সেন্টার এর ই একটা ঘটনা। আমরা ক্যারেফোর থেকে বাজার করে বর্ডারস থেকে আমার মেয়ে র জন্য একটা coloring বই কিনে গাড়িতে যখন সব জিনিস তুলেছি তখন ওই বই এর প্যাকেট টা ট্রলি তেই  ভুলে ফেলে এসেছিলাম।আর ট্রলি টা যেহেতু পার্কিং লট এ পড়ে ছিল তাই আমাদের তো সারা রাত কি টেনশন যে পরের দিন বই টা ফেরত পাবো কি না! কিন্তু না, আমাদের সব চিন্তার অবসান ঘটিয়ে বই টা আমরা ফেরত পেয়েছিলাম mall সিকিউরিটি র কাছ থেকেই।আমাদের শুধু বই এর ডেসক্রিপশন দিতে হয়েছিল, ব্যাস।সেদিন বুঝেছিলাম ইন্ডিয়া আর মাস্কাট কত আলাদা! আর একান্ত ভাবে উপলব্ধি করেছিলাম যে এরাই প্রকৃত শিক্ষা র অধিকারী- " পরের জিনিস এ হাত দিতে নেই,না বলে নেওয়া কে চুরি করা বলে"  এই তত্ত্বে বিশ্বাস করে বোধ হয়।

** আমার ছেলে যখন বলে ইন্ডিয়া তে পড়তে যেতে চায় তখন আমি একটা কথা বলে ওকে বুঝিয়ে দিয়েছি যে ইন্ডিয়া কি রকম ।সেটা হলো " নজর হাট ই তো দুর্ঘটনা ঘা টি" মানে একটু অন্য মনস্ক হয়েছ কি ব্যাস তোমার জিনিস হাওয়া হয়ে যাবে। ইয়ে মেরা ইন্ডিয়া!! এরকম হবে জেনেও প্রতি বছর আমরা কলকাতায় যাই আর যাবো ও, কারণ " সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভুমি" ।



এই সেই হারানো মানিক

সৌজন্যে একান্ত আপন

মন্তব্যসমূহ

  1. কলকাতা কলকাতাই এখান কার মত খাওয়ার শুখ কোথাও নেই।আর পৃজতে যা আনন্দ হয় তা ত সবার জানা।

    উত্তরমুছুন
  2. কলকাতা কলকাতাই এখান কার মত খাওয়ার শুখ কোথাও নেই।আর পৃজতে যা আনন্দ হয় তা ত সবার জানা।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ