একান্ত আপন
আমাদের আজকের গন্তব্য সাফারি ওয়ার্ল্ড।মাস্কাট এ আমরা এই রস এ বঞ্চিত তাই আমাদের থাইল্যান্ড বেড়াতে আসার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল জন্ত- জানোয়ার দেখার!
ঠিক সকাল আটটায় আমরা ব্রেক ফাস্ট খেয়ে একদম রেডি। রামাদার ব্রেকফাস্ট আমাদের কারুর ই পছন্দ হয়নি,কিন্ত ডিনার এ আমরা একটা তন্দুরি থালি অর্ডার দিতাম যেটা দামে ও স্বাদে অপূর্ব ছিল।
এই টুর গুলো ফুল ডে র জন্য হয়, মানে সকালে গিয়ে সেই বিকেলে ফেরা।দুপুরের খাওয়া ওখানেই করব যা প্যাকেজ এ ধরা থাকে।
আমরা এই ৯ টা র আশপাশে সাফারি ওয়ার্ল্ড পৌঁছলাম।আমাদের ড্রাইভার ই আমাদের সকলের টিকিট কেটে আনল আর আমাদের হাতে একটা করে ম্যাপ ধরিয়ে দিল যেটায় পুরো পার্ক এর সমস্ত হদিস দেওয়া আছে।সেখানে বিভিন্ন অ্যানিমাল শো এর ও সব টাইমিং উনি লিখে দিয়ে ছিলেন।আর বলে দিলেন যে আমরা যেন ৩:৩০ তে আবার এই মেন গেট এ ফিরে আসি।
ব্যাস এবার আমাদের নিজেদের পার্ক এক্সপ্লোর করার পালা।প্রথমেই জানলাম যে পার্কটা র দুটো ভাগ - সাফারি পার্ক আর মেরিন পার্ক।আমরা ম্যাপ দেখে দেখে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি,নানা রকম এর পশু দেখে পৌঁছলাম ডলফিন শো দেখতে। এর আগেও আমরা দুবাই তে ডলফিন শো দেখেছি,কিন্ত আমার ছেলে মেয়ের সজ্ঞানে এটাই প্রথম দেখা।জলের মধ্যে ওদের ভল্ট খাওয়া,চশমা পরে ঘোরা আর সবার শেষে পিঠে করে ট্রেইনার কে নিয়ে একবার পুরো টা চষে ফেলা কি করল না! প্রতিবারই ওরা পুরস্কার বাবদ পেল কিছু মাছ।এই শো শুরু হবার আগে বাড়তি পাওনা হয়েছিল ওখানকার লোকাল বাচ্ছাদের গান( স্কুল থেকে আসা বাচ্চারা শো শুরুর আগে হঠাৎ ই গেয়ে উঠে ছিল)। মানে না বুজলে ও ভালো লেগেছিল বেশ।
এর পর টাইম ছিল সিল এর শো দেখার। এখানেও দেখলাম কি অসাধারণ নৈপুণ্যে ওরা ওদের দেওয়া সমস্ত ডিউটি করে গেল।মানুষের বাচ্চারা ও অনেক সময় শেখানো জিনিস ভুল করে,কিন্ত আশ্চর্য ওরা জন্ত হয়ে করেনি!
ওরাং ওটাং গুলো খুব ই অসভ্য।হোস্ট কে থাপ্পড় মারতেও পিছ পা হয়নি।তবে ওদের বক্সিং আমরা খুব এনজয় করেছি।একজন পড়েছিল লাল শর্টস আর আরেকজন নীল শর্টস,ঠিক যেন কোন সত্যি কারের বক্সিং কম্পিটিশন।ওদের আবার সাপোর্টার ও ছিল( ওরাং ওটাং) যারা ওদের চিয়ার আপ করছিল।সব জায়গাতেই এই সব জন্তু দের সঙ্গে ফটো তোলার ব্যাবস্থা আছে,আমরা তুলিনি( ওদের কে জড়িয়ে ধরে ফটো তুলতে কেমন কেমন লাগছিল তাই) ।
কিন্ত ইচ্ছে ছিল একটু এদের ফীড করানোর।তো সেই ইচ্ছে খুব সস্তা তেই পূরণ হয়েছিল।জিরাফ টেরেস থেকে এক বালতি কলা কিনে (৪০ বাট) মনের আনন্দে খাইয়েছি জিরাফদের।ছোটো একটা বালতি ভর্তি কলা আর একটা বিরাট fork যাতে করে ওরা লম্বা গলা বাড়ালেই খাইয়ে দেওয়া যায়।খুব খুব আনন্দ পেয়েছি এই দিন।ভীষন নির্ভেজাল আনন্দের দিন ছিল এটা!
তারপর গেলাম লাঞ্চ করতে কিন্ত আমাদের কোন খানে খাওয়াচ্ছে সেটা একটু খুঁজতে হয়েছিল কারণ অন্য অনেক গ্রুপ যায় সবার এক জায়গায় ব্যাবস্থা থাকে না তাই।অবশ্যই ইন্ডিয়ান ফুড।মেনু ছিল veg- ভাত, পুরী, ডাল ,kheer ( সুজির) আর আইস ক্রিম।আমার খারাপ লাগেনি।খিদের সময় ভাত পেয়েছি আর কি চাই!!
ক্রমশঃ
খাবারের ঢালাও ব্যাবস্থা ছিল, সেল্ফ সার্ভিস,পেট ভরে খাও কম পড়ার কিছু নেই,খালি আইস ক্রিম ১ টাই।
তুই এতো সুন্দর লিখছিস আমার মনে হচ্ছে আমিও তোদের সাথে ই ছিলাম। একেবারে সামনে দেখতে পাচ্ছি।
উত্তরমুছুন