একান্ত আপন
একান্ত আপন
All pictures source is akanto apon
ছাতা হারিয়ে মনের দুঃখে ব্যাঙ্কক এসে পৌঁছলাম।এখানে থাকার জন্য ইকোটেল হোটেল বুক করা ছিল।কিন্ত হোটেল টা তে যখন ঢুকলাম তখন ই একদম ভালো লাগেনি,কারণ খুব ই পুরোনো ধরনের ,লবিতে ওঠার সিঁড়ি টাও ভাঙ্গা ভাঙ্গা মত ছিল।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর যখন চাবি নিয়ে আমাদের রুম এ পৌঁছলাম তখনি আমার মনে হয়ে ছিল যে আমার মেয়ে না হলেও ছেলে এই হোটেল এ থাকতে পারবে না।আসলে আমরা বহুদিন ওই স্ট্যান্ডার্ড এর হোটেল এ থাকিনি,আর ওরা তো অত লো স্ট্যান্ডার্ড হোটেল চোখেই দেখেনি।যদিও হোটেল টা ৪ স্টার।ঢোকার সময় ই আমাদের চোখে পড়েছিল ঠিক উল্টো দিকেই একটা খুব সুন্দর ৪ স্টার হোটেল( রামাদা)। ekotel হোটেল টায় কোনো রুমের কোনো ভিউ তো দূর অস্ত,পর্দা সরালে পাশের হোটেল এর রুম বা এমন দৃশ্য চোখে পড়বে ( ন্যাতা, বালতি ইত্যাদি)যা দেখে আর ওই হোটেল এ থাকার আর আমাদের ইচ্ছে হয়নি।
অথচ আমরা নিজেরাই নেট দেখে হোটেল টা পছন্দ করেছিলাম,তখন বুঝতে পারিনি যে এত বাজে বেরোবে।রুম এ ইলেকট্রিক কেটল নেই,চার্জ করব আমাদের সব ইলেকট্রনিকস তার প্রপার ব্যাবস্থা নেই, মানে একেবারে যাচ্ছে তাই।আর বাথরুম এও এমন টাওয়েল দিয়েছিল যে আমরা বাড়িতে ওর থেকে ভাল টাওয়েল ব্যাবহার করি।তখন আমরা ঠিক করলাম পরের দিন ই আমরা ramada তে শিফট করব।করলাম ও।
অসাধারণ হোটেল ramada।রুম থেকে বাইরের যা ভিউ ভাবা যায় না।আমরা তো ইভনিং এ পর্দা সরিয়ে রোজ বাইরে তাকিয়ে থাকতাম।আমরা দুবাইতে দেখেছি যে ওল্ড সিটি আর নিউ সিটি আলাদা,কিন্ত ব্যাঙ্কক এ ওল্ড আর নিউ হাত ধরাধরি করে একসাথে থাকে।
প্রথম দিন - ওই দিন দুপুর নাগাদ ব্যাঙ্কক পৌঁছেছিলাম বলে ইভনিং আউটিং প্ল্যান করেছিলাম ছাও ফ্রায়া রিভার ক্রুজ দিয়ে।ঠিক টাইম এ হোটেল থেকে লোকাল অপারেটর এসে আমাদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল।পিক আপ ড্রপ প্যাকেজ এ ধরা থাকে সব টুর এই।আমাদের সাথে অন্যান্য হোটেল থেকেও আরো কিছু লোক তুলে বেশ খানিক টা আগেই আমাদের গন্তব্য স্থল এ পৌঁছে দিয়ে ছিল।ওই জায়গাটা অসম্ভব সুন্দর একটা জায়গা।একটা বড় মার্কেট রয়েছে। সেখানের দোকান পাট আমরা একটু ঘুরে ঘুরে দেখলাম কারণ আমাদের ক্রুজ ছাড়বে সন্ধ্যে ৭ টায়।৭-৯ আমরা ক্রুজ এ করে ছাও phraya তে ঘুরব, dinner ও সারব।সব প্যাকেজ এ ইনক্লুড করা থাকে।বিকেল বেলা জাহাজ ছাড়ার আগে ওখানটায় বসে থাকতেও দারুন লাগছিল।
ক্রুজ এ দুটো ডেক। লোয়ার ডেক উইথ এসি আর upper ডেক নন এসি।আমরা এসি ক্লাস নিয়েছিলাম। জুন মাস বাইরে ভীষন গরম ছিল।জাহাজ ছাড়তেই ভেতরে গান বাজনা শুরু হয়ে গেল।আমাদের সবাইকে ছোট্ট গ্লাস এ জুস দিয়ে গেলো মানে যাকে বলে ওয়েলকাম ড্রিংক।অন্যান্য অনেকেই মিউজিক এর সঙ্গে নাচতে শুরু করে দিল,কিন্ত আমরা আবার ওই রস এ বঞ্চিত।আমি বা আমার বর আমরা ছোট থেকে আমাদের ফ্যামিলির এত কঠোর অনুশাসন এ বড় হয়েছি যে ওই সব ঠিক রপ্ত করে উঠতে পারিনি।ও হ্যাঁ একটা কথা বলতে ভুলে গেছি সেটা হল ক্রুজ এ ওঠার আগে ওই কোম্পানি থেকে আমাদের একটা করে অর্কিড ব্রোচ দিয়ে ছিল জামায় লাগাতে আর ফ্যামিলি ফটো তুলে ছিল যেটা আমরা জাহাজে ওঠার কিছুক্ষণ এর মধ্যেই পেয়ে গেছিলাম।একটা ভীষন অন্য রকম অভিজ্ঞতা।খুব কিছু হাই ফাই না হলেও আমরা খুব ই এনজয় করেছিলাম।সন্ধ্যে বেলা ক্রুজ থেকে বাইরের ভিউ ছিল ভীষন সুন্দর।
রাত এ যখন হোটেল এ পৌঁছলাম তখন চোখে শুধুই ঘুম।সারাদিন ধকল ও গেছিল খুব ই,তাই আর দেরি না করে আমরা গেছিলাম ঘুমের দেশে।পরের দিনের গন্তব্য ছিল traimit budhha আর মার্বেল budhha।
ক্রমশঃ
ছবি গুলো দেখে মনটা চলে গেল বিদেশের পথে।
উত্তরমুছুনআমরাও যখনই ছবিগুলো দেখি আমাদের আবার করে ব্যাংকক যেতে ইচ্ছে করে!এতই ভালো লেগেছে সবার!
উত্তরমুছুন