একান্ত আপন

 একান্ত আপন

আমার বারান্দায় ঘুঘু দম্পতি (PICTURE SOURCE: AKANTO APON)

লাস্ট ইয়ার জুলাই এর একটা ঘটনা র কথা লিখতে আজ খুব ইচ্ছে করছে।প্রত্যেক বছর জুন মাসে বাচ্ছাদের স্কুল ছুটি পড়লে আমরা ইন্ডিয়া যাই এক মাসের জন্য।ওই সময় কলকাতায় ভরা বর্ষা থাকে , কোথাও বেরোতে পারি না mall বা কারোর বাড়ি যাওয়া ছাড়া,তবুও যাই নিজের দেশের এমন ই টান।  তো এক মাস থেকে জুলাই তে আমরা যখন মাস্কাট ফিরলাম তখন দেখলাম একটা অদ্ভুত জিনিস।আমার ছেলের বেডরুম এর সাথে যে ব্যালকনি আছে সেখানে একজোড়া  পাখি বাসা করেছে।আমরা তো নিজেদের খুব লাকি ভাবলাম কারণ বাড়িতে পাখির বাসা করা খুব ভালো বলে শুনেছি।পাখি দুটোর ডাক টা ছিল ভীষন আলাদা , কেমন মন খারাপ করা! খুব কমন নয়।তখন আমার জানি কিরকম সন্দেহ হলো আর আমি নেট এ ঘুঘু পাখির ডাক সার্চ করলাম।ব্যাস! আমার সন্দেহ ই সত্যি হলো! বুঝলাম পাখি দুটো ঘুঘু,যাকে আমরা খুব ই অপয়া বলে জানি।মাকে জানালাম।মা বললো যে ওরা ডিম পাড়ার সময় এরকম বাসা করে,তাই বাসাটা ভেঙে দেওয়া ও উচিত হবে না।তাতে গেরস্থের অকল্যাণ হবে।তখন আমরা মায়ের পরামর্শ মতো ওদের ডিম ফোটা অবধি অপেক্ষা করতে লাগলাম।আমার কাজের ছেলেটি চেক করতো আর আমায় আপডেট দিত।  এরকম ই একদিন যখন জানলাম যে ওই বাসাটায় কেও নেই,তখন আর অপেক্ষা না করে বাসাটা ভেঙে দিলাম যাতে আর এসে  না থাকতে পারে।আমরা তো গৃহস্থ মানুষ তাই সংসারের ভালো মন্দ  আমাদের দেখতেই হবে।সেইজন্য এই অপ্রীয় কাজ টা করতে বাধ্য হয়ে ছিলাম।আমরা যখন এমনএকটা কুসংস্কার কে মেনে নিয়ে এরকম একটা কাজ করলাম, তখন আরো একটা এই রকম ই ঘটনা আনন্দবাজার এ পড়ে যে কি অবাক ই হয়েছিলাম কি বলবো। কি ছিল সেই ঘটনা ; বলছি।
আমি রোজ আনন্দবাজার পড়ি,এমন পড়ি যে ঘটনাগুলো প্রায় মুখস্থ হয়ে যায়।এরকম ই একদিন আন্তর্জাতিক খবরগুলো তে চোখ বোলাচ্ছি,এক জায়গায় হঠাৎ চোখ টা আটকে গেলো। ওমা এ কি কান্ড করেছে দুবাই এর যুবরাজা মশাই ! অবশ্য বলেই রাজা গজা দের ব্যাপার।সেই খবর টা এরকম ছিল,আমার বারান্দার মতই দুটো ঘুঘু ওনার গাড়ির( প্রায় ২.৫ কোটির গাড়ি) বনেটে র ওপর বাসা করেছে দেখে উনি সেই গাড়িটি একদম ঘিরে দিয়ে সিকিউরিটি দের বলে দিয়েছিলেন যে দেখতে যেন কেও ওদের ডিস্টার্ব না করে কারণ ওরা ডিম পারবে বলেই বাসা করেছে।সত্যি একেই বলে রাজার মতো চিন্তা ভাবনা,সবার থেকে আলাদা।তারপর উনি পুরো ঘটনাটা(  ওদের ডিম ফুটে ছানা বেরোনো অবধি ) দূর থেকে ভিডিও করে আপলোড করে দেন,যেটা আমি আনন্দবাজার পড়ে জানতে পারি।আনন্দবাজার কে অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা ঘটনা আমাদের সামনে নিয়ে আসার জন্য।
* আমার বারান্দার পাখির ছবিটা আমার মেয়ে মই নিয়ে উঠে তুলেছিল।ওকে ও অনেক অনেক ধন্যবাদ।


(PICTURE SOURCE:GOOGLE)
NEST ON THE CAR OF CROWN PRINCE OF DUBAI



মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ